রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এর কিছু বাণী বা উক্তি

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ১৮৬১ সালের ৭ই মে কলকাতার এক ধনাঢ্য পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তিঁনি ছিলেন অগ্রণী বাঙ্গালী কবি, ঔপন্যাসিক, সঙ্গীতস্রষ্টা, নাট্যকার, চিত্রকর, ছোটগল্পকার, প্রাবন্ধিক, কন্ঠশিল্পী ও দার্শনিক। ঊনবিংশ শতাব্দীর শেষ ও বিংশ শতাব্দীর প্রথমার্ধে বাংলা সাহিত্য ও সংগীতে রবীন্দ্রনাথ এক যুগান্তকারী পরিবর্তনের সূচনা করেন। গীতাঞ্জলি কাব্যগ্রন্থের জন্য ১৯১৩ সালে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন তিনি। নোবেল ফাউন্ডেশন তাঁর এই কাব্যগ্রন্থটিকে বর্ণনা করেছিল একটি “গভীরভাবে সংবেদনশীল, উজ্জ্বল ও সুন্দর কাব্যগ্রন্থ” রূপে। দীর্ঘ রোগভোগের পর ১৯৪১ সালের ৭ই অগাস্ট জোড়াসাঁকোর বাসভবনে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।

“নদীর এপার কহে ছাড়িয়া নিশ্বাস, ওপারেতে সর্বসুখ আমার বিশ্বাস। নদীর ওপার বসি দীর্ঘশ্বাস ছাড়ে; কহে, যাহা কিছু সুখ সকলি ওপারে।” – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

“নারী দাসী বটে, কিন্তু সেই সঙ্গে নারী রাণীও বটে” – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

“আনন্দকে ভাগ করলে দুটি জিনিস পাওয়া যায়; একটি হচ্ছে জ্ঞান এবং অপরটি হচ্ছে প্রেম” – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

“আমরা বন্ধুর কাছ থেকে মমতা চাই, সমবেদনা চাই, সাহায্য চাই ও সেই জন্যই বন্ধুকে চাই” – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

“স্বামীরা প্রেমিক হতে অবশ্যই রাজি, তবে সেটা নিজের স্ত্রীর সাথে নয়। নিজের স্ত্রীর প্রেমিক হবার বিষয়টা কেন যেন তারা ভাবতেই চায় না” – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

“শিমুল কাঠই হোক আর বকুল কাঠই হোক, আগুনের চেহারাটা একই” – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

“পৃথিবীর সবচেয়ে বড় দূরত্ব কোনটি জানো? নাহ, জীবন থেকে মৃত্যু পর্যন্ত, উত্তরটা সঠিক নয়। সবচেয়ে বড় দূরত্ব হলো যখন আমি তোমার সামনে থাকি, কিন্তু তুমি জানো না যে আমি তোমাকে কতটা ভালোবাসি। ” – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

“যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে তবে একলা চলো রে” – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

“পৃথিবীতে বালিকার প্রথম প্রেমেরমত সর্বগ্রাসী প্রেম আর কিছুই নাই। প্রথমযৌবনে বালিকা যাকে ভালোবাসে তাহার মত সৌভাগ্যবানও আর কেহই নাই। যদিও সে প্রেম অধিকাংশ সময় অপ্রকাশিত থেকে যায়, কিন্তু সে প্রেমের আগুন সব বালিকাকে সারাজীবন পোড়ায়।” – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

“অপর ব্যাক্তির কোলে পিঠে চড়িয়া অগ্রসর হওয়ার কোন মাহাত্ম্য নাই – কারণ চলিবার শক্তিলাভই যথার্থ লাভ, অগ্রসর হওয়া মাত্র লাভ নহে” – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

“চোখ কতটুকুই দেখে কান কতটুকুই শোনো স্পর্শ কতটুকুই বোধ করে। কিন্তু মন এই আপন ক্ষুদ্রতাকে কেবলই ছড়িয়ে যাচ্ছে।” – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

“মানুষের একটা বয়স আছে যখন সে চিন্তা না করিয়াও বিবাহ করিতে পারে। সে বয়স পেরোলে বিবাহ করিতে দুঃসাহসিকতার দরকার হয়” – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

“ছোট ছোট মুখ জানে না ধরার দুখ, হেসে আসে তোমাদের দ্বারে। নবীণ নয়ন তুলি কৌতুকেতে দুলি দুলি চেয়ে চেয়ে দেখে চারিধারে।” – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

“আমার মৃত্যুকালে তোমাকে যে- কথাটা বলিব মনে করিয়াছিলাম, আজ তাহা বলিতে ইচ্ছা করিতেছে। আজ মনে হইতেছে, তুমি আমাকে যত শাস্তি দাও- না কেন আমি বহন করিতে পারিব।” – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

“বিয়ে করলে মানুষকে মেনে নিতে হয়, তখন আর গড়ে নেবার ফাঁক পাওয়া যায় না।” – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

“নরমাংসের স্বাদ পাইলে মানুষের সম্বন্ধে বাঘের যে দশা হয়, স্ত্রীর সম্বন্ধে তাহার ভাবটা সেইরূপ হইয়া উঠে” – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

“একটা মন আর একটা মনকে খুজিতেছে নিজের ভাবনার ভার নামাইয়া দিবার জন্য, নিজের মনের ভাবকে অণ্যের মনে ভাবিত করিবার জন্য। ” – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

“হেরো পুরানো প্রাচীন ধরণী হয়েছে শ্যামল-বরনী,
যেন যৌবন-প্রবাহ ছুটিছে কালের শাসন টুটাতে;
পুরানো বিরহ হানিছে, নবীন মিলন আনিছে,
নবীন বসন্ত আইল নবীন জীবন ফুটাতে” – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

“সাধারণত স্ত্রীজাতি কাঁচা আম, ঝাল লঙ্কা এবং কড়া স্বামীই ভালোবাসে। যে দুর্ভাগ্য পুরুষ নিজের স্ত্রীর ভালোবাসা হইতে বঞ্চিত সে – যে কুশ্রী অথবা নির্ধন তাহা নহে; সে নিতান্ত নিরীহ।” – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

“গোলাপ যেমন একটি বিশেষ জাতের ফুল, বন্ধু তেমনি একটি বিশেষ জাতের মানুষ” – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

“রুদ্র, তোমার দারুণ দীপ্তি
এসেছে দুয়ার ভেদিয়া;
বক্ষে বেজেছে বিদ্যুৎবাণ
স্বপ্নের জাল ছেদিয়া” – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

“ভালোবাসা কথাটা বিবাহ কথার চেয়ে আরো বেশি জ্যান্ত” – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

“রাত কাটে, ভোর হয়,
পাখি জাগে বনে —
চাঁদের তরণী ঠেকে
ধরণীর কোণে” – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

“মনে যখন একটা প্রবল আনন্দ একটা বৃহৎ প্রেমের সঞ্চার হয় তখন মানুষ মনে করে, ‘আমি সব পারি’। তখন হঠাৎ আত্মবিসর্জনের ইচ্ছা বলবতী হইয়া ওঠে।” – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

“এসো, এসো, এসো হে বৈশাখ
তাপসনিশ্বাসবায়ে মুমূর্ষুরে দাও উড়ায়ে,
বৎসরের আবর্জনা দূর হয়ে যাক
যাক পুরাতন স্মৃতি, যাক ভুলে যাওয়া গীতি,
অশ্রুবাষ্প সুদূরে মিলাক।
মুছে যাক গ্লানি, ঘুচে যাক জরা,
অগ্নিস্নানে শুচি হোক ধরা।” – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

“যায় যদি লুপ্ত হয়ে থাকে শুধু থাক এক বিন্দু নয়নের জল কালের কপোল তলে শুভ্র সমুজ্জ্বল এ তাজমহল” – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

“প্রেমের মধ্যে ভয় না থাকলে রস নিবিড় হয় না” – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

“তুমি যদি না দেখা দাও, কর আমায় হেলা,
কেমন করে কাটে আমার এমন বাদল-বেলা। ” – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

“হে ভৈরব, হে রুদ্র বৈশাখ!
ধুলায় ধূসর রুক্ষ উড্ডীন পিঙ্গল জটাজাল,
তপঃক্লিষ্ট তপ্ত তনু, মুখে তুলি বিষাণ ভয়াল
কারে দাও ডাক
হে ভৈরব, হে রুদ্র বৈশাখ! ” – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

“শুধু দিনযাপনের শুধু প্রাণধারণের গ্লানি
শরমের ডালি,
নিশি নিশি রুদ্ধ ঘরে ক্ষুদ্রশিখা স্তিমিত দীপের
ধূমাঙ্কিত কালি,
লাভ-ক্ষতি-টানাটানি, অতি ক্ষুদ্র ভগ্ন-অংশ-ভাগ,
কলহ সংশয়–
সহে না সহে না আর জীবনেরে খণ্ড খণ্ড করি
দণ্ডে দণ্ডে ক্ষয়।” – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

“সোহাগের সঙ্গে রাগ না মিশিলে ভালবাসার স্বাদ থাকেনা – তরকারীতে লঙ্কামরিচের মত” – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

“সমাজ সংসার মিছে সব,
মিছে এ জীবনের কলরব।
কেবলই আঁখি দিয়ে আঁখির সুধা পিয়ে
হৃদয় দিয়ে হৃদি অনুভব –
আঁধারে মিশে গেছে আর সব।” – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

“দীর্ঘ আয়ু দীর্ঘ অভিশাপ বিচ্ছেদের তাপ নাশে সেই বড়ো তাপ” – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

“যে ধর্মের নামে বিদ্বেষ সঞ্চিত করে, ঈশ্বরের অর্ঘ্য হতে সে হয় বঞ্চিত।” – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

“সময়ের সমুদ্রে আছি কিন্তু এক মুহুর্তে সময় নেই” – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

“সাহেব সাজা বাঙালিদের প্রতি পদে ভয়,
পাছে তারা বাঙালি বলে ধরা পড়েন” – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

“ভাবিতেছিলাম উঠি কি না উঠি,
অন্ধ তামস গেছে কিনা ছুটি,
রুদ্ধ নয়ন মেলি কি না মেলি
তন্দ্রা-জড়িমা মাজিয়া।
এমন সময়ে, ঈশান, তোমার
বিষাণ উঠেছে বাজিয়া।” – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

“নিন্দা করতে গেলে বাইরে থেকে করা যায়, কিন্তু বিচার করতে গেলে ভিতরে প্রবেশ করতে হয়” – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

“মনুষ্যত্বের শিক্ষাটাই চরম শিক্ষা আর সমস্তই তার অধীন” – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

“তোমার পতাকা যারে দাও তারে বহিবারে দাও শকতি” – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

“এরা সুখের লাগি চাহে প্রেম, প্রেম মেলে না, শুধু সুখ চলে যায়” – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

“মানুষ পণ করে পণ ভাঙিয়া ফেলিয়া হাঁফ ছাড়িবার জন্য” – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

“মধুর বসন্ত এসেছে মধুর মিলন ঘটাতে।
মধুর মলয়-সমীরে মধুর মিলন রটাতে।
কুহক লেখনী ছুটায়ে কুসুম তুলিছে ফুটায়ে,
লিখিছে প্রণয়-কাহিনী বিবিধ বরন-ছটাতে” – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

“সে আমার সম্পত্তি নয়, সে আমার সম্পদ” – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

“প্রহর শেষের আলোয় রাঙা সেদিন চৈত্রমাস
তোমার চোখে দেখেছিলাম আমার সর্বনাশ।” – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

“আমি তোমারি বিরহে রহিব বিলীন, তোমাতে করিব বাস–
দীর্ঘ দিবস, দীর্ঘ রজনী, দীর্ঘ বরষ-মাস ।
যদি আর-কারে ভালোবাস, যদি আর ফিরে নাহি আস,
তবে তুমি যাহা চাও তাই যেন পাও, আমি যত দুখ পাই গো” – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

“আগুনকে যে ভয় পায়,
সে আগুনকে ব্যবহার করতে পারে না” – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

“বিয়ে করলে মানুষকে মেনে নিতে হয়, তখন আর গড়ে নেবার ফাঁক পাওয়া যায় না” – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

“বৈশাখ হে, মৌনী তাপস, কোন্‌ অতলের বাণী
এমন কোথায় খুঁজে পেলে।
তপ্ত ভালের দীপ্তি ঢাকি মন্থর মেঘখানি
এল গভীর ছায়া ফেলে॥” – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

“সংসারে সেরা লোকেরাই কুড়ে এবং বেকার লোকেরাই ধন্য। উভয়রে সম্মিলন হলেই মণি কাঞ্চন যোগ। এই কুঁড়ে বেকারে মিলনের জন্যইতো সন্ধ্যেবেলাটার সৃষ্টি হয়েছে।যোগীদরে জন্য সকালবেলা রোগীেদের জন্য রাত্রি কাজের লোকদের জন্য দশটা-চারটে। ” – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

“ভয়ের তাড়া খেলেই ধর্মের মূঢ়তার পিছনে মানুষ লুকাতে চেষ্টা করে” – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

“সুখে আছে যারা সুখে থাক তারা
সুখের বসন্ত সুখে হোক সারা” – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

“আমি বিন্দুমাত্র আলো, মনে হয় তবু
আমি শুধু আছি আর কিছু নাই কভু।
পলক পড়িলে দেখি আড়ালে আমার
তুমি আছ হে অনাদি আদি অন্ধকার!” – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

“পুরুষের বুদ্ধি খড়গের মতো; শান বেশি না দিলেও কেবল ভারেই অনেক কাজ করতে পারে। মেয়েদের বুদ্ধি কলম-কাটা ছুরির মতো; যতই ধার দাওনা কেনো, তাতে বৃহৎ কাজ চলে না।” – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

“যৌবনের শেষে শুভ্র শৎরকালের ন্যায় একটি গভীর প্রশান্ত প্রগাঢ় সুন্দর বয়স আসে যখন জীবনের শেষে ফল ফলিবার এবং শস্য পাকিবার সময়” – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

“ঈশানের পুঞ্জমেঘ অন্ধবেগে ধেয়ে চলে আসে
বাধাবন্ধহারা
গ্রামান্তরে বেণুকুঞ্জে নীলাঞ্জনছায়া সঞ্চারিয়া
হানি দীর্ঘধারা।
বর্ষ হয়ে আসে শেষ, দিন হয়ে এল সমাপন,
চৈত্র অবসান–
গাহিতে চাহিছে হিয়া পুরাতন ক্লান্ত বরষের
সর্বশেষ গান।” – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

“বীণাতন্ত্রে হানো হানো খরতর ঝংকারঝঞ্ঝনা,
তোলো উচ্চসুর।
হৃদয় নির্দয়ঘাতে ঝর্ঝরিয়া ঝরিয়া পড়ুক
প্রবল প্রচুর।
ধাও গান, প্রাণভরা ঝড়ের মতন ঊর্ধ্ববেগে
অনন্ত আকাশে।
উড়ে যাক, দূরে যাক বিবর্ণ বিশীর্ণ জীর্ণ পাতা
বিপুল নিশ্বাসে।” – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

“ভৈরব, তুমি কী বেশে এসেছ,
ললাটে ফুঁসিছে নাগিনী,
রুদ্র-বীণায় এই কি বাজিল
সুপ্রভাতের রাগিণী?” – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

“যে ছেলে চাবামাত্রই পায়, চাবার পূর্বেই যার অভাব মোচন হতে থাকে; সে নিতান্ত দুর্ভাগা। ইচ্ছা দমন করতে না শিখে কেউ কোনকালে সুখী হতে পারেনা।” – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

“নিজের অজ্ঞতা সম্বন্ধে অজ্ঞানতার মতো অজ্ঞান আর তো কিছু নাই” – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

“শর ভাবে, ছুটে চলি, আমি তো স্বাধীন,
ধনুকটা একঠাঁই বদ্ধ চিরদিন।
ধনু হেসে বলে, শর, জান না সে কথা-
আমারি অধীন জেনো তব স্বাধীনতা।” – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

“আহা আজি এ বসন্তে
এত ফুল ফোটে, এত বাঁশি বাজে
এত পাখি গায় আহা আজি এ বসন্তে।” – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

“আনন্দে আতঙ্ক মিশি, ক্রন্দনে উল্লাসে গরজিয়া
মত্ত হাহারবে
ঝঞ্ঝার মঞ্জীর বাঁধি উন্মাদিনী কালবৈশাখীর
নৃত্য হোক তবে।
ছন্দে ছন্দে পদে পদে অঞ্চলের আবর্ত-আঘাতে
উড়ে হোক ক্ষয়
ধূলিসম তৃণসম পুরাতন বৎসরের যত
নিষ্ফল সঞ্চয়।” – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

“অধিকার ছাড়িয়া দিয়া অধিকার রাখিতে যাইবার মত এমন বিড়ম্বনা আর না” – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

“অলৌকিক আনন্দের ভার, বিধাতা যাহারে দেন, তার বক্ষে বেদনা অপার” – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

“ওগো অকরুণ, কী মায়া জানো, মিলনছলে বিরহ আনো” – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

“তোমার প্রজাপতির পাখা
আমার আকাশ-চাওয়া মুগ্ধ চোখের
রঙিন স্বপন মাখা ।
তোমার চাঁদের আলোয়
মিলায় আমার দুঃখ-সুখের সকল অবসান” – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

“অধিকার ছাড়িয়া দিয়া অধিকার ধরিয়া রাখার মত বিড়ম্বনা আর হয় না” – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

“‘কত বড়ো আমি’ কহে নকল হীরাটি। তাই তো সন্দেহ করি নহ ঠিক খাঁটি।” – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

“রুদ্রতপের সিদ্ধি এ কি ওই-যে তোমার বক্ষে দেখি,
ওরই লাগি আসন পাতো হোমহুতাশন জ্বেলে॥
নিঠুর, তুমি তাকিয়েছিলে মৃত্যুক্ষুধার মতো
তোমার রক্তনয়ন মেলে।” – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

“অক্ষমের লোভ আলাদিনের প্রদিপের গুজব শুনলেই লাফিয়া অঠে” – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

“তার পরে ফেলে দাও, চূর্ণ করো, যাহা ইচ্ছা তব–
ভগ্ন করো পাখা।
যেখানে নিক্ষেপ কর হৃত পত্র, চ্যুত পুষ্পদল,
ছিন্নভিন্ন শাখা,
ক্ষণিক খেলনা তব, দয়াহীন তব দস্যুতার
লুণ্ঠনাবশেষ,
সেথা মোরে ফেলে দিয়ো অনন্ততমিস্র সেই
বিস্মৃতির দেশ।” – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

“অসীম সে চাহে সীমার নিবিড় সঙ্গ সীমা হতে চায় অসীমের মাঝে হারা” – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

“সময়ের সমুদ্রে আছি,কিন্তু একমুহূর্ত সময় নেই” – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

“ভীষণ, তোমার প্রলয়সাধন প্রাণের বাঁধন যত
যেন হানবে অবহেলে।
হঠাৎ তোমার কণ্ঠে এ যে আশার ভাষা উঠল বেজে,
দিলে তরুণ শ্যামল রূপে করুণ সুধা ঢেলে॥” – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

“তোমারে প্রণমি আমি, হে ভীষণ, সুস্নিগ্ধ শ্যামল,
অক্লান্ত অম্লান’।
সদ্যোজাত মহাবীর, কী এনেছ করিয়া বহন
কিছু নাহি জান।
উড়েছে তোমার ধ্বজা মেঘরন্ধ্রচ্যুত তপনের
জলদর্চিরেখা–
করজোড়ে চেয়ে আছি উর্ধ্বমুখে, পড়িতে জানি না
কী তাহাতে লেখা।” – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

“তোমার অশোকে কিংশুকে, অলক্ষ্য রঙ লাগল আমার অকারণের সুখে” – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

“পাওয়া কাকে বলে যে মানুষ জানে না সে ছোঁয়াকেই পাওয়া মনে করে” – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

“তর্কের বেলায় গৃহিণীর যুক্তিকে অকাট্য বলে কাজের বেলায় নিজের যুক্তিতে চলাই সৎ পরামর্শ ” – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

“ক্ষমাই যদি করতে না পারো, তবে তাকে ভালোবাসো কেন?” – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

“কী পাইনি তারই হিসাব মেলাতে মন মোর নহে রাজি” – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

“যে পথে অনন্ত লোক চলিয়াছে ভীষণ নীরবে
সে পথপ্রান্তের
এক পার্শ্বে রাখো মোরে, নিরখির বিরাট স্বরূপ
যুগযুগান্তের।
শ্যেনসম অকস্মাৎ ছিন্ন করি ঊর্ধ্বে লয়ে যাও
পঙ্ককুণ্ড হতে,
মহান মৃত্যুর সাথে মুখামুখি করে দাও মোরে
বজ্রের আলোতে।” – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

“তোমার ইঙ্গিত যেন ঘনগূঢ় ভ্রূকুটির তলে
বিদ্যুতে প্রকাশে,
তোমার সংগীত যেন গগনের শত ছিদ্রমুখে
বায়ুগর্জে আসে,
তোমার বর্ষণ যেন পিপাসারে তীব্র তীক্ষ্ণ বেগে
বিদ্ধ করি হানে–
তোমার প্রশান্তি যেন সুপ্ত শ্যাম ব্যাপ্ত সুগম্ভীর
স্তব্ধ রাত্রি আনে। ” – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

“সংসারে সাধু-অসাধুর মধ্যে প্রভেদ এই যে, সাধুরা কপট আর অসাধুরা অকপট” – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

“কেউ বা মরে কথা বলে, আবার কেউ বা মরে কথা না বলে” – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

“অন্যায় যে করে আর অন্যায় যে সহে তবে ঘৃণা তারে যেস তৃণসম দহে” – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

“আনন্দে আতঙ্কে নিশি নন্দনে উল্লাসে গরজিয়া
মত্ত হাহা রবে
ঝার সঞ্জীব বাধ উন্মাদিনী কালবৈশাখীর
নৃত্য হোক তবে ।” – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

“উপার্জনে আমাদের সুযোগ কম বলেই আসক্তি সঞ্ছয়ে ভিতু আমরা” – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

“ধর্ম যারা সম্পূর্ণ উপলব্ধি না করিয়া প্রচার করিতে চেষ্টা করে তহারা ক্রমশই ধর্মকে জীবন হইতে দূরে ঠেলিয়া থাকে। ইহারা ধর্মকে বিশেষ গন্ডি আঁকিয়া একটা বিশেষ সীমানার মধ্যে আবদ্ধ করে।” – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

“সঞ্চয়ের বড়ো দুর্জয় নেশা …আমাদের দেশে ইহাকেই বলে নিরানব্বইয়ের ধাক্কা” – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

“হে নূতন, এসো তুমি সম্পূর্ণ গগন পূর্ণ করি
পুঞ্জ পুঞ্জ রূপে–
ব্যাপ্ত করি, লুপ্ত করি, স্তরে স্তরে স্তবকে স্তবকে
ঘনঘোরস্তূপে।
কোথা হতে আচম্বিতে মুহূর্তেকে দিক্‌ দিগন্তর
করি অন্তরাল
স্নিগ্ধ কৃষ্ণ ভয়ংকর তোমার সঘন অন্ধকারে
রহো ক্ষণকাল।” – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

“আমরা কথার অধীন, প্রধার অধীন অসংখ্য প্রবৃত্তির অধীন” – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

“অনুগ্রহ দুঃখ করে, দিই, নাহি পাই। করুণা কহেন, আমি দিই, নাহি চাই।” – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

“মুক্ত করি দিনু দ্বার– আকাশের যত বৃষ্টিঝড়
আয় মোর বুকে,
শঙ্খের মতন তুলি একটি ফুৎকার হানি দাও
হৃদয়ের মুখে।
বিজয়গর্জনস্বনে অভ্রভেদ করিয়া উঠুক
মঙ্গলনির্ঘোষ,
জাগায়ে জাগ্রত চিত্তে মুনিসম উলঙ্গ নির্মল
কঠিন সন্তোষ।” – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

“প্রেমের আনন্দ থাকে স্বল্পক্ষণ কিন্তু বেদনা থাকে সারাটি জীবন” – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

“অতীতকাল যত বড় কালই হ’ক নিজের সম্বন্ধে বর্তমান কালের একটা স্পর্ধা থাকা উচিত। মনে থাকা উচিত তার মধ্যে জয় করবার শক্তি আছে।” – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

“যৌবনই ভোগের কাল বার্ধক্য স্মৃতিচারণের” – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *